IQNA

সফর মাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিন এবং আমলসমূহ

18:47 - October 22, 2017
সংবাদ: 2604130
সফর মাস হচ্ছে আরবি বছরের দ্বিতীয় মাস। সফর মাসের দ্বিতীয় দিনে রাসূল(সা.)-এর আহলে বাইতকে শামে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এই দিনে ইমাম হুসাইন(আ.)-এর তিন বছরের শিশু কন্যা হযরত সাকিনাও ইয়াজিদের কারাগারে শাহাদাত বরণ করেন।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: ২৮ সফর রাসূল(সা.)-এর ওফাত দিবস এবং এই মাসের শেষ তারিখে শিয়া মাজহাবের অষ্টম ইমাম হযরত আলী ইবনে মুসা রেজা(আ.)-এর শাহাদাত দিবস।

এই মাসের উল্লেখ যোগ্য ঘটনাবলী হচ্ছে: ৩৭ হিজরিতে সিফ্ফিনের যুদ্ধ, ইমাম হুসাইন(আ.)-এর মাথা মোবারক দামেস্কে নিয়ে আসা হয়, ইমাম ইমাম হুসাইন(আ.)-এর আরবাইন তথা চল্লিশা, ৫৭ হিজরিতে ইমাম মুহাম্মাদ বাকের(আ.)-এর জন্ম, ১২৮ হিজরিতে ইমাম মুসা কাজিম (আ.)-এর জন্ম, ১২১ হিজরিতে শাহাদাতে যাইদ বিন আলী, ৩৭ হিজরিতে সিফ্ফিনের যুদ্ধে আম্মার ইয়াসির ও খুমযাইমা যুশ শাহাদাতাইনের শাহাদত। অনুরূপভাবে ১১ হিজরির ২৮ সফর রাসূল(সা.)-এর ওফাত দিবস, ৫০ হিজরির ২৮ সফর ইমাম হাসান(আ.)-এর শাহাদাত দিবস এবং ২০৩ হিজরিতে এই মাসের শেষ তারিখে শিয়া মাজহাবের অষ্টম ইমাম হযরত আলী ইবনে মুসা রেজা(আ.)-এর শাহাদাত দিবস।

নাম করণের ইতিবৃত্ত: ১) সাফরা অর্থাৎ হলুদ, যখন এই মাসের নাম করণ করা হয় তখন শরত কাল ছিল এবং গাছের পাতা হলুদ হয়ে গিয়েছিল।

২) সেফর অর্থাৎ শূন্য বা খালি, মুহররম মাসের পর যেহেতু সকলেই যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে পড়ত তাই শহর খালি হয়ে যেত। সেজন্য এই মাসের নাম সফর রাখা হয়েছে।

সফর মাসের কিছু আমল

১) এই মাসে বেশী করে সদকা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাসূল(সা.) সদকা সম্পর্কে বলেছেন: তোমার দ্বিনী ভাইয়ের সাথে হাসি মুখে কথা বলা হচ্ছে সদকা, ন্যায় কাজের আদেশ ও অন্যায় কাজের নিষেধ হচ্ছে সদকা। পথ হারাকে পথ দেখানোও হচ্ছে সদকা এবং মানুষের চলার পথের কাটা, পাথর ও বাধাকে সরিয়ে নেয়াও হচ্ছে সদকা।

২) বিপদাপদ থেকে মুক্তির জন্য প্রতিদিন এই দোয়াটি পাঠ করা:

یا شَدیدَ الْقُوی‏ وَیا شَدیدَ الْمِحالِ یا عَزیزُ یا عَزیزُ یا عَزیزُ ذَلَّتْ بِعَظَمَتِکَ جَمیعُ خَلْقِکَ فَاکْفِنی‏ شَرَّ خَلْقِکَ یا مُحْسِنُ یا مُجْمِلُ یا مُنْعِمُ یا مُفْضِلُ یا لا اِلهَ اِلاّ اَنْتَ سُبْحانَکَ اِنّی‏ کُنْتُ مِنَ الظَّالِمینَ فَاسْتَجَبْنا لَهُ وَنَجَّیْناهُ مِنَ الْغَمِّ وَکَذلِکَ نُنْجِی الْمُؤْمِنینَ وَصَلَّی اللَّهُ عَلی‏ مُحَمَّدٍ وَ الِهِ‏ الطَّیِّبینَ الطَّاهِرینَ! (مفاتیح الجنان)

৩) সাইয়েদ বিন তাউস তার ইকবাল গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, সফর মাসের তিন তারিখে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, প্রথম রাকাতে সূরা হামদের পর সূরা ফাতহ পাঠ করতে হবে। আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা হামদের পর সূরা তৌহিদ পাঠ করতে হবে। নামাজ শেসে ১০০ বার সালাওয়াত পাঠ করতে হবে। তারপর আবু সুফিয়ানের বংশের উপর ১০০ বার লানত পাঠ করতে হবে। অতঃপর ১০০ বার আসতাগফিরুল্লাহ পাঠ করে তারপর আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।

৪) সফল মাসের ২০ তারিখে ইমাম হুসাইন(আ.)-এর আরবাইন তথা চল্লিশা, এই দিনে ইমাম হুসাইনের যিয়ারত করা মোস্তাহাব। ইমাম জাফর সাদিক(আ.) থেকে শেখ তুসি বর্ণনা করেছেন: মুমিনের চিহ্ন পাঁচটি: ১-ইমাম হুসাইন(আ.)-এর যিয়ারত, ২-প্রতি দিন ৫১ রাকাত নামাজ আদায় করা (১৭ রাকাত ওয়াজিব এবং ৩৪ রাকাত নফল), ৩-ডান হাতে আংটি পরা, ৪-পবিত্র মাটিতে সিজদা করা এবং ৫-নামাজে উচ্চস্বরে বিসমিল্লাহ পাঠ করা।

(সূত্র: হিদায়াতুল আনাম ইলা ওকাইয়া আল আইয়াম, পৃ: ৬৩, মাফাতিহ আল জিনান পৃ: ৫৩২) 
captcha